লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলায় ধর্ষকের সঙ্গে কিশোরীর বিয়ে কাজি গ্রেপ্তার।

লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলায় ধর্ষকের সঙ্গে কিশোরীর বিয়ে কাজি গ্রেপ্তার।

সাধন রায় লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ


লালমনিরহাট পাটগ্রাম  উপজেলায় ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে অভিযুক্ত ধর্ষণকারীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে কাজিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার(১২নভেম্বর) ওই কাজিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একই দিন ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
গ্রেপ্তার কাজির নাম শাহাআলম  ইসলাম। তিনি লালমনিরহাট হাতিবান্ধা  উপজেলার দর্রজীপাড়া  ইউনিয়নের বাসিন্দা।


অন্যদিকে শনিবার বিকেলে বিশেষ ব্যবস্থায় লালমনিরহাট হাতিবান্ধা উপজেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌসী বেগম কিশোরীর জবানবন্দি নিয়েছেন।লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলা  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন্ত মোহণ  ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কাজি শহিদুল ইসলামকে পুলিশ বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী শনিবার সকালে শাহাআলম  ইসলামকে শনাক্ত করে। পরে ধর্ষণের মামলায় শাহাআলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।


এর আগে গত বুধবার এ মামলার প্রধান আসামি শাহিন আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ  আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা বলেন, মামলার প্রধান আসামি শাহিন আলমকে গ্রেপ্তারের পর থেকে বিভিন্ন লোকজন তাঁকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। বিশেষ করে শাহিনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা তাঁর মেয়ের সম্পর্কে নানান কটু কথা বলে বেড়াচ্ছেন।
কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, এসআই মাইনুল ইসলামের কথায় শাহিনের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম।

বিয়েতে ছেলেপক্ষকে ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়েছিলাম। কাজি শহাআলম  নিয়েছিলেন ১৪ হাজার টাকা। তবে মেয়ের বয়স কম এই অজুহাতে কাবিনের কাগজ আমাদের দেয় নাই। এই সুযোগে ছেলেপক্ষ মেয়েকে আমার বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছে, আর বলে বেড়াচ্ছে বিয়ে হয়নি। আমি শাহিন আলম, শহিদুল ও এসআই মাইনুলের উপযুক্ত বিচার চাই।’


উল্লেখ্য, মামলার প্রধান আসামি শাহিন আলম (২৪) ওই কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। কিশোরীটি রাজি না হওয়ায় শাহিন ওই কিশোরীর ছবি সম্পাদনা করে আপত্তিকর ভিডিও বানান। অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখান তিনি। একপর্যায়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন শাহিন।

এতে কিশোরীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে শাহিন আলম কিশোরীকে গর্ভপাতের জন্য চাপ দিতে থাকেন। গত ২৫ জুলাই লালমনিরহাট পাটগ্রাম একটি ক্লিনিকে কিশোরীর গর্ভপাত করা হয়। এরপর তিনি কিশোরীকে ক্লিনিকে রেখে পালিয়ে যান। পরে এক ভ্যানচালকের সহায়তায় বাড়ি ফিরে ওই কিশোরী পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানায়। অভিযোগ আছে, লালমনিরহাট পাটগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলাম কিশোরীকে শাহিনের সঙ্গে বিয়ের পরামর্শ দিয়েছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন